Summary
বোর পরমাণুর মডেল: নীলস বোর ১৯১৩ সালে ম্যাক্স প্লাঙ্কের বিকিরন কোয়ান্টাম তত্ত্বের ভিত্তিতে পরমাণুর মডেল প্রস্তাব করেন।
- ইলেকট্রনের শক্তিস্তরের ধারণা: ইলেকট্রনরা নির্দিষ্ট শক্তিস্থরে কক্ষপথে ঘুরে, শক্তি বিকিরণ বা শোষণ করে না। শক্তিস্তরগুলি প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা (n) দ্বারা প্রকাশিত হয় এবং K, L, M, N ইত্যাদি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
 - শক্তি শোষণ বা বিকিরণ: ইলেকট্রন এক শক্তিস্থর থেকে অন্য শক্তিস্থরে স্থানান্তরিত হলে শক্তি শোষণ বা বিকিরণ ঘটে। শক্তি পরিবর্তন অনুযায়ী, শোষিত বা বিকিরিত শক্তি (E2– E1) দ্বারা গণনা করা হয়।
 
বোর পরমাণুর মডেলের সীমাবদ্ধতা:
- মডেলটি একক ইলেকট্রনযুক্ত পরমাণুগুলির বর্ণালী ব্যাখ্যা করতে পারলেও একাধিক ইলেকট্রনের বর্ণালী ব্যাখ্যা করতে পারে না।
 - ইলেকট্রনের শক্তিস্থর স্থানান্তরিত হলে বর্ণালিতে অনেক সূক্ষ্ম রেখা থাকে যা মডেল ব্যাখ্যা করতে পারে না।
 - এটি হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তার নীতি এবং অন্যান্য প্রকৃত ফলাফলের ব্যাখ্যা দিতে অক্ষম।
 
বোর পরমাণুর মডেল :
ম্যাক্স প্লাঙ্কের বিকিরন কোয়ান্টাম তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পরমাণুর এবং একই সাথে পারমানবিক বর্ণালী ব্যাখ্যার জন্য নীলস বোর ১৯১৩ সালে তাঁর বিখ্যাত পরমাণু মডেল প্রকাশ করেন। বোর পরমাণুর মডেলের প্রধান তিনটি স্বীকার্য হচ্ছে -
১.ইলেকট্রনের স্থির কক্ষপথ বা শক্তিস্তরের ধারণা:
পরমাণুতে যে সব ইলেকট্রন থাকে তারা নিউক্লিয়ানকে কেন্দ্র করে ইচ্ছমত যে কোন বৃত্তাকার কক্ষপথে বিচরণ করতে পারে না, কেবলমাত্র কতগুলো নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধের বৃত্তকার কক্ষপথে কোন রুপ শক্তি বিকিরণ না করে অনবরত ঘুরতে থাকে। এই কক্ষপথগুলোকে শক্তিস্তর বলে। শক্তিস্তর নির্দেশকারী এই সংখ্যাগুলোকে প্রধান কোয়ান্টাম বলে (n)। এই শক্তিস্তরগুলোকে 1,2,3...... ইত্যাদি পূর্ণ সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এই শক্তিস্তরগুলোকে ইংরেজী অক্ষর K,L,M,N... ইত্যাদি দ্বারাও প্রকাশ করা হয়। নিউক্লিয়াস হতে যত দূরে যাওয়া যায় কক্ষপথের শক্তি ততই বৃদ্ধি পায় ।
২.শক্তি শোষণ বা বিকিরণ ও বর্ণালী সৃষ্টির ধারণা :
নির্দিষ্ট বৃত্তাকার কক্ষপথে যেকোন একটিতে বিচরণকালে ইলেকট্রন কোন শক্তি বর্জনও করে না, শোষণও করে না অথাৎ এই কক্ষপথগুলিতে ইলেকট্রন স্থির না থাকলেও এদের শক্তি স্থির থাকে । ইলেকট্রন এক শক্তিস্তর থেকে অন্য শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত শক্তির শোষণ বা বিকিরণ ঘটে। উচ্চ শক্তিস্তর (যার শক্তি E2) হতে নিম্ন শক্তিস্ত (যার শক্তি E1) এ স্থানান্তরিত হলে যে শক্তি বিকিরণ হয় তার পরিমাণ হবে (E2– E1) । আবার নিম্ন শক্তিস্তর (যার শক্তি E1) হতে উচ্চ শক্তিস্ত (যার শক্তি E2) এ স্থানান্তরিত হলে যে শক্তি বিকিরণ হয় তার পরিমাণ হবে (E2 - E1 ) । অতএব শোষিত বা বিকিরিত শক্তিকে নিম্নের সমীকরনের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।
বোর পরমাণুর মডেলের সীমাবদ্ধতা :
১. এই মডেল যে সকল পরমাণু বা আয়নে একটি মাত্র ইলেকট্রন থাকে (যেমন- H, He, Li2+) তাদের বর্ণালী ব্যাখ্যা করতে পারলেও একাধিক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুসমূহের বর্ণলী ব্যাখ্যা করতে পারে না
২. ইলেকট্রন যখন এক শক্তিস্তর হতে অপর শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হয় তখন বোর পরমাণু মডেল অনুসারে বর্ণালিতে একটি করে রেখা সৃষ্টি হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবে অধিকতর সূক্ষ্ম যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষা করলে দেখা যায়, পারমাণবিক বর্ণলির প্রতিটি রেখা একাধিক সূক্ষ্ম রেখায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। বোরের মতবাদ এর কোন ব্যাখ্যা দিতে পারে না। অবশ্য পরবর্তীতে বোর মতবাদের সম্প্রসারন করে বিজ্ঞানী সমারফিল্ড এর ব্যাখ্য প্রদান করে।
৩. বোর মতবাদ হাইজেনবার্গ এর অনিশ্চয়তার নীতি, স্টার্ক ফলাফল, জীম্যান ফলাফল ব্যাখ্যা করতে পারে না ।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more